30 November 2020

আলেমদের কটাক্ষ নয়, কথা বলতে দিন: সরকারকে জাফরুল্লাহ


 গোয়েন্দা বাহিনী দেশের আলেমদের ‘মিসগাইড’ করছে দাবি করে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী সরকারকে উদ্দেশ্য করে বলেছেন, ‘সরকারকে আমি বলবো, অকারণে আলেম সমাজকে কটু কথা বলবেন না। তাদের কটাক্ষ করবেন না। তাদেরকে কথা বলতে দিন। আমাদের দরকার ভালোভাবে বেঁচে থাকা।’


প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘অহেতুক বিতর্ক সৃষ্টি না করে আপনি (প্রধানমন্ত্রী) বরং যে কাজটা করতে পারেন, আপনি আপনার উন্নয়নের জন্য পুলিশকে অনুরোধ করেন, তারা যেন ফুটপাত থেকে, রিকশাচালক ও দিনমজুরের কাছ থেকে ঘুষ না খায়। তাতে অনেক লাভবান হবেন আপনি।’ 

সোমবার (৩০ ন‌ভেম্বর) দেশজুড়ে ধর্ষণ-শিশু নির্যাতন ও বিচারহীনতার প্রতিবাদে প্রেসক্লাবে সাংবিধানিক অধিকার ফোরাম আয়োজিত মানববন্ধনের তিনি এ আহ্বান জানান।

ভাস্কর্য স্থাপনের বিষয় জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‘অকারণে আওয়াজ তুলবেন না। মূর্তি এটা একটি অহেতুক বিতর্ক। আলেমগণ আপনারা আমাদের শ্রদ্ধেয় ব্যক্তি। আপনাদের দায়িত্ব হবে মানবিক। অহেতুক বিতর্ক করে ইসলামকে ছোট করবেন না। আজকে মৌলভী সাহেবেরা কেন যৌন নির্যাতনের সাথে যুক্ত হবেন।’ 

এসময় দেশের আলেম সমাজকে অন্যদের দ্বারা প্রভাবিত না হয়ে কাজ করার আহ্বান জানান তিনি।

ডা. জাফরুল্লাহ আরও বলেন, ‘আজকে আমি মনে করি মানবিক কল্যাণের জন্য আমাদের সবাইকে চেষ্টা করতে হবে।’

সরকারের উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডের মূল্যায়নের জন্য প্রধানমন্ত্রীকে একটি মধ্যবর্তী নির্বাচন দেয়ার আহ্বান জানিয়ে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‘এই যে এতো পরিশ্রম, এতো উন্নয়ন কর্মকাণ্ড সেগুলোর মূল্যায়ণ করতে আপনারা একটি মধ্যবর্তী নির্বাচন দিন। তাতে জনগণ ঠিক করবে আপনাদের কর্মকাণ্ডে তারা কতটা সন্তুষ্ট।’ 

মানবিক করণে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে জামিন দেয়ার আহ্বান জানানোর পাশাপাশি বিএনপিকেও রাজপাথে নামার আহ্বান জানান প্রবীণ এই রাজনৈতিক বিশ্লেষক। 

সাংবিধানিক অধিকার ফোরামের সভাপতি বাবু সুরঞ্জন ঘোষের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে আরও বক্তব্য রাখেন, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সহ-সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা ফরিদ উদ্দিন, কৃষক দলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য কে এম রকিবুল ইসলাম রিপন, মহিলা দল নেত্রী আরিফা সুলতানা রুমা, ঐক্যফ্রন্টের দফতর প্রধান জাহাঙ্গীর আলম মিন্টু ও সাবেক ছাত্রদল নেত্রী সেলিনা সুলতানা নিশিতা প্রমুখ।

‘বিনামূল্যে’ নভেল করোনা ভাইরাসের টিকা দেবে সরকার, আসছে ৩ কোটি ডোজ

 


মহামারি নভেল করোনা ভাইরাসের টিকা জনগণের মাঝে বিনামূল্যে সরবরাহ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। 


সোমবার (৩০ নভেম্বর) সকালে মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে এ প্রস্তাব অনুমোদন দেয়া হয়েছে। গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। 

বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, করোনা ভাইরাসের টিকা বিনামূল্যে দেবে সরকার। প্রথম ধাপে যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের তৈরি টিকার তিন কোটি ডোজ কিনবে বাংলাদেশ। এসব টিকা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) নীতিমালা অনুযায়ী জনগণকে বিনামূল্যে দেয়া হবে। 

বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব ড. খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান, টিকা কেনার জন্য ৭৩৫ কোটি ৭৭ লাখ টাকা এরইমধ্যে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অনুকূলে ছাড় দিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়। 

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ সরকার এই টিকা কিনে আনবে এবং বিনামূল্যে তা সরবরাহ করবে।’

জনগণের মাঝে বিনামূল্যে করোনার টিকা প্রয়োগের ক্ষেত্রে যে কোনও ধরনের অনিয়ম ও স্বজনপ্রীতি কঠোরভাবে দমন করা হবে বলেও জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব। 

মন্ত্রিসভার বৈঠকে চলমান করোনার দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবিলায় মাস্ক না পরলে সর্বোচ্চ জরিমানা করার নির্দেশনা দেয়া হয়। তবে জরিমানার সর্বোচ্চ পরিমাণ নির্দিষ্ট করে জানানো হয়নি। 

এ প্রসঙ্গে ড. খন্দকার আনোয়ারুল বলেন, ‘এক সপ্তাহ দেখার পর মাস্ক না পরার দায়ে কারাদণ্ড দেয়ার মতো কঠোর অবস্থানেও যেতে পারে সরকার।’

26 November 2020

গত ২৪ ঘণ্টায় ৩৭ জনের মৃত্যু, শনাক্ত হয়েছে ২২৯২

 করোনা ভাইরাসে দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ৩৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ৫২৪ জনে। এছাড়া এ সময়ের মধ্যে নতুন করে ২ হাজার ২৯২ জন শনাক্ত হয়েছে। ফলে দেশে মোট শনাক্তের সংখ্যা ৪ লাখ ৫৬ হাজার ৪৩৮ জনে দাঁড়ালো।



বৃহস্পতিবার (২৬ নভেম্বর) বিকেলে স্বাস্থ্য অধিদফতর নিয়মিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে দেশের করোনা ভাইরাস পরিস্থিতির সর্বশেষ এ তথ্য জানানো হয়েছে।


বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় ১১৮টি ল্যাবরেটরিতে ১৬ হাজার ৪৯৪টি নমুনা সংগ্রহ ও ১৭ হাজার ৫৩২টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। 
গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন ২ হাজার ২৭৪ জন। এ পর্যন্ত মোট সুস্থ হয়েছেন ৩ লাখ ৭১ হাজার ৪৫৩ জন।

গত ৮ মার্চ বাংলাদেশে প্রথম করোনা ভাইরাস শনাক্ত হয়। প্রথম মৃত্যুর খবর আসে ১৮ মার্চ। এর মধ্যে গত ৫ নভেম্বর মৃত্যুর সংখ্যা ৬ হাজার ছাড়িয়েছে। একদিনে সর্বোচ্চ ৬৪ জনের মৃত্যুর খবর আসে ৩০ জুন।

গত বছরের ডিসেম্বরে চীনে করোনা ভাইরাসের উপদ্রব শুরু হয়। বর্তমানে বিশ্বের ২১৩ দেশ ও অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে এই ভাইরাস। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ১১ মার্চ কোভিড ১৯-কে বৈশ্বিক মহামারি ঘোষণা করে।

ম্যারাডোনা আমাদের ছেড়ে যাননি: মেসি

 


ফুটবলের কিংবদন্তি দিয়াগো ম্যারাডোনার মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন আর্জেন্টিনার বর্তমান অধিনায়ক লিওনেল মেসি।

বুধবার মেসি তার ভেরিফায়েড ইনস্টাগ্রাম হ্যান্ডেল থেকে শোক প্রকাশ করে একটি স্ট্যাটাস দেন। সেই সঙ্গে ফুটবলের জাদুকরের সঙ্গে তার দুটি ছবিও পোস্ট করেছেন তিনি। 

বর্তমান ফুটবল বিশ্বের অন্যতম সেরা ফুটবলার মেসি বলেন, আর্জেন্টিনার জনগণ ও ফুটবলের জন্য আজকের দিনটি খুবই দুঃখজনক। তিনি বিদায় নিয়েছেন কিন্তু আমাদের ছেড়ে চলে যাননি, কারণ দিয়াগো অমর। 

ম্যারাডোনার পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে তিনি লেখেন, তার সঙ্গে কাটানো প্রতিটি মুহূর্ত আমার মনে থাকবে। শোক সন্তপ্ত পরিবার ও তার বন্ধুদের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করছি। তার আত্মা শান্তি পাক।

প্রসঙ্গত আর্জেন্টিনার কিংবদন্তি ফুটবলার দিয়াগো ম্যারাডোনা বুধবার হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। এর আগে বেশ কয়েক দিন অসুস্থ ছিলেন তিনি।

তিগ্রে-তে নিজ বাসায় মারা যান ম্যারাডোনা। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৬০ বছর। গত মাসে হাসপাতাল থেকে বাসায় ফিরেছিলেন ম্যারাডোনা। বুয়েনস এইরেসের হাসপাতালে তার মস্তিষ্কে জরুরি অস্ত্রোপচার করা হয়। মস্তিষ্কে জমাট বেঁধে থাকা রক্ত (ক্লট) অপসারণ করা হয়েছিল। 

না ফেরার দেশে চলে গেলেন ফুটবল কিংবদন্তি দিয়েগো ম্যারাডোনা



না ফেরার দেশে চলে গেলেন ফুটবল কিংবদন্তি দিয়েগো ম্যারাডোনা। বুধবার (২৫ নভেম্বর) হঠাৎ হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন তিনি।মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৬০ বছর।

নভেম্বরের শুরুতে আর্জেন্টিনার সাবেক অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার এবং কোচের ব্রেনের সফল অস্ত্রোপাচার হয়েছিল। সে সময় অতিরিক্ত অ্যালকোহলের ওপর নির্ভরশীল হওয়ায় ম্যারাডোনা শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়েছিলেন বলে জানানো হয়।

 বিশ্ব ফুটবল ইতিহাসের সর্বকালের সেরা ফুটবলার হিসেবে বিবেচিত ম্যারাডোনার নেতৃত্বে ১৯৮৬ সালে বিশ্বকাপ জেতে আর্জেন্টিনা। টুর্নামেন্টে তার জাদুময় পারফরম্যান্স মন ভরিয়ে দিয়েছিল ফুটবল প্রেমীদের।

ক্লাব পর্যায়ে তিনি বার্সেলোনা অধ্যায় শেষে যোগ দেন নাপোলিতে। এখানেও নিজের একক নৈপুণ্যে ইতালিয়ান ক্লাবটিকে দু’টি লিগ শিরোপা জেতান ম্যারাডোনা। আর্জেন্টিনার জার্সিতে ৯১ ম্যাচে ৩৪ গোল করেছেন তিনি। খেলেছেন ৪টি বিশ্বকাপে।

ম্যারাডোনার নেতৃত্বে ১৯৯০ সালের ইতালি বিশ্বকাপেও ফাইনালে খেলে আর্জেন্টিনা। তবে সেবার তারা হেরে যায় পশ্চিম জার্মানির কাছে। পরে ১৯৯৪ সালের যু্ক্তরাষ্ট্র বিশ্বকাপে ড্রাগ টেস্টে পজিটিভ হওয়ায় তাকে নিষিদ্ধ করা হয়। এফেড্রিন নামক ড্রাগ নিয়ে ম্যারাডোনা খেলতে নেমেছিলেন, এমন দাবি করা হয়।

ক্যারিয়ারের দ্বিতীয়ার্ধে, তিনি কোকেইন আসক্তির সঙ্গে লড়াই করতে থাকেন এবং ১৯৯১ সালে ড্রাগ টেস্টে পজিটিভ হওয়ায় ১৫ মাস নিষিদ্ধ হন। ম্যারাডোনা পেশাদারি ফুটবল থেকে অবসর নেন ১৯৯৭ সালে, তার ৩৭তম জন্মদিনে। আর্জেন্টাইন জায়ান্ট বোকা জুনিয়র্সে নিজের দ্বিতীয় স্পেলে থাকার সময় বুটজোড়াকে চিরতরে অবসর পাঠান তিনি।

এরপর কোচিং ক্যারিয়ার শুরু করেন ম্যারাডোনা। খেলোয়াড়ি জীবনের সময়ও সংক্ষিপ্ত সময়য়ের জন্য নিজ দেশের দু’টি ক্লাবের কোচ ছিলেন তিনি। ছিয়াশির মহানায়ক আর্জেন্টিনা জাতীয় ফুটবল দলের প্রধান কোচ হিসেবে নিয়োগ পান ২০০৮ সালে। তার অধীনে ২০১০ সালে বিশ্বকাপ খেলে আলবিসেলেস্তেরা। তবে সেবার আর্জেন্টিনা ঘরে ফেরে কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে, জার্মানির বিপক্ষে হেরে।

নিজ দেশ ছাড়াও ম্যারাডোনা কোচ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং মেক্সিকোর দু’টি ফুটবল ক্লাবের। মৃত্যুর আগে তিনি নিযু্ক্ত ছিলেন আর্জেন্টিনার শীর্ষ ফুটবল লিগের ক্লাব জিমনেসিয়া ওয়াই এগগ্রিমার কোচ হিসেবে।


24 November 2020

রাজধানীর মহাখালীর সাত তলা বস্তিতে ভয়াবহ আগুন

 


রাজধানীর মহাখালীর সাত তলা বস্তির ভয়াবহ আগুনে প্রায় দেড়শ বস্তির ঘর ও দোকান পুড়ে ভস্মীভূত হয়েছে। বস্তির অনেকেই তাদের শেষ সম্বলটুকু হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে গেছে। এক ঘণ্টার আগুনে বস্তিবাসীর চোখের সামনে মুহূর্তেই পুড়ে যায় তাদের স্বপ্ন। রাত ১২টা ৫৫ মিনিটে ১২ ইউনিটের চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসার ঘোষণা দেয় ফায়ার সার্ভিস। 


সোমবার (২৩ নভেম্বর) রাত ১২টা ৫৫ মিনিটে ফায়ার সার্ভিসের ঢাকা বিভাগের উপ-পরিচালক দেবাশীষ বর্ধন আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার ঘোষণা দেন। তবে আগুনের কারণে ক্ষয়ক্ষতির তথ্য তাৎক্ষণিকভাবে জানাতে পারেননি তিনি।

মঙ্গলবার (২৪ নভেম্বর) ভুক্তভোগী আনিস শেখ ব্রেকিংনিউজকে বলেন, ‘রাতে যখন খাওয়া দাওয়া করে ঘুমানোর জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন ঠিক তখনই দাওদাও করে আগুন লাগে। মুহূর্তের আগুন ছড়িয়ে যায় তার ঘরে। পরে পরিবার নিয়ে প্রান নিয়ে কোনও মতে ঘর থেকে বের হতে পারলেও পুড়ে গেছে তার ঘরের আসবাবপত্র থেকে শুরু করে চাল, ডাল ও জামাকাপড়ও ‘ 

আসমা বানু নামে বস্তির এক দোকানী ব্রেকিংনিউজকে বলেন, ‘দোকানে প্রায় লাখ পাঁচেক টাকার জিনিসপত্র ছিল কিন্তু দোকান থেকে কিছুই সড়াতে পারেনি। আগুন লাগার সময়ে তিনি ঘরে ছিলেন। পরে আগুন লাগার খবরে বাইরে এসে দেখি চোখের সামনে দোকান পুড়ে যাচ্ছে। এ কষ্ট আমার জীবনের সবচেয়ে বড় কষ্ট।’ 

কাঁচামালের দোকানদার ফানিফ ব্যাপারী ব্রেকিংনিউজকে বলেন, ‘নগদ ৫০ হাজার টাকা, তিন গাড়ি মালামাল, ঘরের আসবাবপত্রসহ সব পুড়ে গেছে। শুধু পড়নের কাপড় ছাড়া আর কিচ্ছু বাকি নেই পুড়তে। আগুনে কোনও কিছুই বের করতে পারেনি। শুধু জানটা নিয়ে বেঁচে আছি।’ 

স্বপ্না আক্তার ব্রেকিংনিউজকে বলেন, ‘স্বামী রিকশা চালায়। সঙ্গে আছে সাত মাস বয়সী বাচ্চা। পরনের কাপড় ছাড়া আর কোনও কিছু নেই। করোনার কারণে আয় রোজকার কম হয় তাই ঘরে দুই মন চাল কিনে রেখেছিলেন। কিন্তু ভাগ্যের কি নির্মমতা! দুই মন চাল পুড়ে ভাত হয়ে গেছে।’ 

এর আগে রাত ১২টার দিকে ফায়ার সার্ভিসের ডিউটি অফিসার মাহফুজ রিবেন ব্রেকিংনিউজকে জানান, সোমবার রাত ১১টা ৪৭ মিনিটে ওই বস্তিতে আগুন লাগে।

ফায়ার সার্ভিস সূত্রে জানা গেছে, আগুন লাগার খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের পাঁচটি ইউনিট আগুন নেভানোর কাজ শুরু করে। আগুনের তীব্রতা বাড়তে থাকলে ঘটনাস্থলে আরও ইউনিট যোগ দিতে শুরু করে। রাত সোয়া ১২টা নাগাদ মোট ১২টি ইউনিট পুরোদমে আগুন নেভানোর কাজ করছিল। আগুন লাগার একঘণ্টারও বেশি সময় পর রাত ১২টা ৫৫ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।

গুলশান নিকেতনের পশ্চিম পাশের এলাকাটি বস্তি হলেও সেখানে একটি বাজার আছে, আছে কয়েকটি পাকা বাড়িও।

প্রাথমিকভাবে আগুন লাগার কারণ জানাতে পারেনি ফায়ার সার্ভিস। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণও এখনও জানা যায়নি। তবে স্থানীয়রা জানিয়েছেন, বস্তির কয়েকশ ঘরের মধ্যে কমপক্ষে দেড় থেকে দুইশ ঘর পুড়ে ছাই হয়েছে।

21 November 2020

‘নানাভাই ইন-শাআল্লাহ দেখা হবে আল্লাহর জান্নাতে’ ‘হৃদয়স্পর্শী’ স্ট্যাটাস দিয়েছে - মিজানুর রহমান আজহারী।

 কসবা আড়াইবাড়ি আলিয়া মাদরাসার অধ্যক্ষ মাওলানা গোলাম সারোয়ার সাঈদী ইন্তেকাল করেছেন (ইন্নালিল্লাহি... রাজিউন)। শনিবার (২১ নভেম্বর) ভোর ৪টা ২০ মিনিটে তিনি মৃত্যুবরণ করেছেন।  এদিকে তার মৃত্যুতে  ‘হৃদয়স্পর্শী’ স্ট্যাটাস দিয়েছেন বাংলাদেশের একজন ধর্মীয় আলোচিত বক্তা মিজানুর রহমান আজহারী। 



মিজানুর রহমান আজহারী শনিবার (২১ নভেম্বর) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মাওলানা গোলাম সারোয়ার সাঈদীর মৃত্যুতে শোকাহত হয়ে একটি স্ট্যাটাস দেন।  স্ট্যাটাসটি  পাঠকের জন্য হুবহুব তুলে ধরলাম। 

 
‘প্রিয় নানাভাই অধ্যক্ষ গোলাম সারওয়ার সাঈদি (পীরসাহেব আড়াইবাড়ী দরবার)‏ আল্লাহর জিম্মায়।  ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন।  আল্লাহ তায়ালা তাঁর দ্বীনের একনিষ্ঠ এই খাদেমকে কবুল করুন এবং জান্নাতুল ফিরদাউসের মেহমান বানিয়ে নিন। আমিন। ’

‘একই মঞ্চে নানা নাতিকে আর হয়তো কোনদিন একসাথে দেখা যাবে না।  বিদায় নানা ভাই।  আমরাও আসছি, পরের কোন এক ফ্লাইটে। ইনশাআল্লাহ দেখা হবে আল্লাহর জান্নাতে। ’

‘এভাবেই প্রিয়জনদের বিদায়গুলো আমাদের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয় চিরসত্যকে আর এই বলে স্মরণ করিয়ে দিয়ে যায় — প্রস্তুত তো?’

গোলাম সারোয়ার সাঈদী আর নেই

 


কসবা আড়াইবাড়ি আলিয়া মাদরাসার অধ্যক্ষ মাওলানা গোলাম সারোয়ার সাঈদী ইন্তেকাল করেছেন (ইন্নালিল্লাহি... রাজিউন)। শনিবার (২১ নভেম্বর) ভোর ৪টা ২০ মিনিটে তিনি মৃত্যুবরণ করেছেন। তার বয়স হয়েছিল ৫২ বছর। বাদ আসর কসবার আড়াইবাড়ি মূল দরবার শরিফে তার জানাজা অনুষ্ঠিত হবে।


মরহুমের ভাতিজা আড়াইবাড়ি দরবার কুমিল্লার পীর গোলাম পরোয়ার সাঈদী জানান, অসুস্থ হওয়ার পর বেশকিছু দিন ঢাকার একটি বেরসকারি হাসপাতালে লাইফ সাপোর্টে ছিলেন তিনি। 

পীরসাহেব আড়াইবাড়ী বলে দেশজুড়ে খ্যাতি ছিল এই মিষ্টিভাষী সুবক্তার। বিগত কয়েক বছরে ইউটিউবে দীনের বিভিন্ন বিষয়ের উপর তার বয়ান ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। 

18 November 2020

চীনের 'উহান' যে শহরে করোনা নিয়ে লেখায় সাংবাদিকের কারাদণ্ড

 


চীনের উহান, যে শহরে করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব। সেখানে করোনা নিয়ে খবর প্রকাশ করে কারাদণ্ডের মুখে পড়তে যাচ্ছেন চীনেরই এক নাগরিক সাংবাদিক। গত মে মাসে গ্রেপ্তার হওয়ার পর থেকে আটক আছেন ৩৭ বছর বয়সী ঝ্যাং ঝান। তার পাঁচ বছরের মতো সাজা হতে পারে।  


ঝ্যাং ঝান নিজের গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে আমরণ অনশনে যান। ১৮ সেপ্টেম্বর তার আইনজীবী মুঠোফোনে একটি কল পান। তাকে জানানো হয়, ঝ্যাং ঝানকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। গত শুক্রবার তার বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ আনা হয়েছে।

ঝ্যাং ঝান একজন সাবেক আইনজীবী। নতুন প্রকাশ হওয়া নথিতে দেখা গেছে, ‘ঝগড়া বাধানো ও সমস্যাকে উসকানি’ দেওয়ায় তাকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। চীনে অ্যাকটিভিস্টদের প্রায়ই এই অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয়ে থাকে।

করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের সূচনা চীনের হুবেই প্রদেশের রাজধানী উহানে। ওই সময় সেখানে করোনা নিয়ে প্রতিবেদন করায় সাংবাদিক আটকের ঘটনা এটা প্রথম নয়।

উহান শহরে করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব নিয়ে খবর প্রকাশ করে গত ফেব্রুয়ারিতে নিখোঁজ হন তিনজন। তাদের মধ্যে লি জেহুয়া নামের এক ব্যক্তি এপ্রিল মাসে ফিরে এসে দাবি করেন, তিনি এত দিন কোয়ারেন্টিনে ছিলেন। চেন কুইশির নামের আরেকজনের খোঁজ পরে পাওয়া গেলেও তাকে সরকারি নজরদারিতে রাখা হয়। তবে তৃতীয় সাংবাদিক ফাং বিন এখনো নিখোঁজ।

নতুন প্রকাশ হওয়া একটি অভিযোগপত্রে দেখা গেছে, ঝ্যাং ঝান ফেব্রুয়ারিতে উহানে যান। সেখান থেকে তিনি কতগুলো প্রতিবেদন করেন। 

কিন্তু গত ১৪ মে ঝ্যাং ঝান উহান থেকে হারিয়ে যান বলে জানিয়েছে চীনা বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা নেটওয়ার্ক অব চাইনিজ হিউম্যান রাইটস ডিফেন্ডারস (সিএইচআরডি)। এক দিন পর জানা যায়, ৪০০ মাইলের বেশি দূরের শহর সাংহাই থেকে তাকে আটক করেছে পুলিশ। ১৯ জুন তাকে আনুষ্ঠানিকভাবে সাংহাইতে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। এর প্রায় তিন মাস পর ৯ সেপ্টেম্বর তার আইনজীবীকে তার সঙ্গে দেখা করার সুযোগ দেওয়া হয়।

সিএইচআরডি জানিয়েছে, আটক ঝ্যাং ঝান নিরপেক্ষ সাংবাদিক এবং তাদের পরিবারের যারা স্বচ্ছতার দাবি তুলেছিলেন, তাদের হয়রানি নিয়েও খবর প্রকাশ করেছিলেন।

গতকাল সোমবার প্রকাশিত হওয়া ওই অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, ঝ্যাং ঝান লেখনী, ভিডিও ও অন্যান্য মাধ্যম ব্যবহার করে উইচ্যাট, টুইটার ও ইউটিউবে মিথ্যা তথ্য ছড়িয়েছেন। এ ছাড়া তার বিরুদ্ধে বিদেশি সংবাদমাধ্যমে সাক্ষাৎকার দিয়ে উহানের ভাইরাস পরিস্থিতি নিয়ে বাজেভাবে তথ্য ছড়ানোর অভিযোগ আনা হয়েছে। এসব অভিযোগের জন্য তাকে চার থেকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড চাওয়া হয়েছে।

তবে চীনা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে ঝ্যাং ঝানের সমস্যা এবারই প্রথম নয়। সিএইচআরডি জানিয়েছে, ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরে তাকে সাংহাইতে তলব করে পুলিশ। ওই সময়ে হংকংয়ের অ্যাকটিভিস্টদের পক্ষে কথা বলায় তাকে আটকও করা হয়। ওই অবস্থায় জোর করে তার মানসিক পরীক্ষা করানো হয় বলে জানা যায়।

টিকা সরবরাহ শুরু করলো মার্কিন ওষুধ প্রস্তুতকারক কোম্পানি ফাইজার

 


মার্কিন ওষুধ প্রস্তুতকারক কোম্পানি ফাইজার যুক্তরাষ্ট্রে তাদের আবিষ্কৃত করোনা টিকার সরবরাহ শুরু করেছে। প্রথম ধাপে রোড আইল্যান্ড, টেক্সাস, নিউ মেক্সিকো এবং টিনেসি অঙ্গরাজ্যে এই টিকা সরবরাহের পরীক্ষামূলক পাইলট কর্মসূচি চালু করেছে।


তবে এই সরবরাহ প্রক্রিয়ায় প্রধান সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে তাপমাত্রা। কারণ, ফাইজার উদ্ভাবিত টিকা সংরক্ষণ করতে হয় মাইনাস ৭০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। যেখানে অন্য সাধারণ টিকা রাখা হয় ২ থেকে ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। এক্ষেত্রে ফাইজারের এই টিকা সাধারণ ওষুধ বিতরণকারীদের কাছে রাখা কঠিন হয়ে পড়তে পারে। 

সোমবার ফাইজার এক বিবৃতিতে বলেছে, টিকার পাইলট কর্মসূচি চালু হয়েছে। এর ফলে যুক্তরাষ্ট্রের অন্য রাজ্যগুলো এবং আন্তর্জাতিক সরকারগুলোর জন্য এই সরবরাহ একটি মডেল হিসেবে কাজ করবে। এরই মধ্যে ফাইজারের টিকা শতকরা ৯০ ভাগ সফল বলে প্রাথমিক তথ্যে বলা হয়েছে। তবে আনুষ্ঠানিকভাবে এখনও স্বীকৃতি দেয়া হয়নি এই টিকা বা অন্য কোনো টিকা।

ফাইজার বলেছে, অন্য রাজ্যগুলোর আগেই রোড আইল্যান্ড, টেক্সাস, নিউ মেক্সিকো এবং টিনেসিতে যাচ্ছে এই টিকা। এখনও যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন এলাকায় বৃহত্তর পরিসরে চলছে এই টিকার নিরাপত্তা পরীক্ষা। এর ফল নভেম্বরের তৃতীয় সপ্তাহে পাওয়ার কথা। যদি এতে সব কিছু ঠিক থাকে তাহলে জরুরি ভিত্তিতে তা ব্যবহারে অনুমোদন দিতে পারে কর্তৃপক্ষ।

ফাইজার এবং এর অংশীদার বায়োএনটেক এসই ২২ ইউএওয়াই.এফ মার্কিন সরকারকে ১০ কোটি টিকা সরবরাহের জন্য ১৯৫ কোটি ডলারের চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। তবু বাড়তি ৫০ কোটি ডোজ প্রয়োজন যুক্তরাষ্ট্রের। 

এছাড়া সোমবার ফাইজারের প্রতিদ্বন্দ্বী মডার্না বলেছে, তাদের করোনার টিকা শতকরা ৯৪.৫ ভাগ কার্যকর প্রমাণিত হয়েছে। তারা আশা প্রকাশ করেছে, করোনার টিকা শিগগিরই ব্যবহারের জন্য বাজারে দিতে পারবে তারা। 

২৪ ঘণ্টা ধরে বিদ্যুৎহীন, সীমাহীন দুর্ভোগ অবস্থায় আছে সিলেট জেলা


 সিলেট জেলা ২৪ ঘণ্টা ধরে বিদ্যুৎহীন অবস্থায় আছে। গতকাল মঙ্গলবার বেলা পৌনে ১১টার দিকে সিলেটের আখালিয়ার কুমারগাঁও বিদ্যুৎ উপকেন্দ্রে আগুন লাগার পর থেকে এই অবস্থা। আগুন লাগার দুই ঘণ্টা পর বেলা পৌনে একটার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে এলেও বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক হয়নি।

এ বিষয়ে আজ বুধবার বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড সিলেটের প্রধান প্রকৌশলী (বিক্রয় ও বিতরণ) খন্দকার মোকাম্মেল হোসেন বলেন, গতকাল রাত থেকে প্রায় ৪০০ কর্মী কাজ করছেন। আজ দুপুরের আগে মেরামত করা কিছু পিলার পরীক্ষামূলকভাবে চালু করা হবে। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে জেলার কিছু এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক হবে। বাকি এলাকায় কখন বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক হবে, তা অনিশ্চিত।

আগুন লাগার পরপর সিলেট বিভাগের সিলেট ও সুনামগঞ্জ জেলার বিদ্যুৎ চলে যায়। পরে সন্ধ্যা ছয়টার দিকে বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক হয় সুনামগঞ্জে। সিলেট নগরের ভুক্তভোগীরা জানিয়েছেন, অগ্নিকাণ্ডের কারণে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকায় সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষ নগরে পানি সরবরাহ করতে পারছে না। বিভিন্ন হাসপাতাল-ক্লিনিকে চরম দুরবস্থার মধ্যে আছেন চিকিৎসাধীন রোগী ও তাঁদের স্বজনেরা। অধিকাংশ বিপণিবিতান ও দোকানপাট অন্ধকারাচ্ছন্ন হয়ে আছে। পাশাপাশি কলকারখানায় উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে।

সিলেট সিটি করপোরেশনের পানি সরবরাহ শাখার নির্বাহী প্রকৌশলী আলী আকবর বলেন, নগরে প্রায় ৮ লাখ বাসিন্দার দৈনিক পানির চাহিদা রয়েছে ৮ কোটি লিটার। এর মধ্যে ৪ থেকে ৫ কোটি লিটার সিটি কর্তৃপক্ষ সরবরাহ করতে পারে। যদিও নগরে সাড়ে ৫৪ হাজার হোল্ডিংয়ের মধ্যে পানির গ্রাহক রয়েছেন সাড়ে ১৬ হাজার। গতকাল বিদ্যুৎকেন্দ্রে আগুন লাগার আগে প্রায় ১ কোটি লিটার পানি সরবরাহ করা গেছে। এ অবস্থায় নগরবাসী হঠাৎ করে তীব্র পানির সংকটে পড়ে গেছেন। বিদ্যুৎ পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত সঠিকভাবে পানি সরবরাহ করা সম্ভব হবে না জানিয়ে সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে গতকাল নগরে মাইকিং করা হয়েছে।

নগরের কয়েকজন ব্যবসায়ী বলেন, বিদ্যুৎ না থাকায় ক্রেতাদের উপস্থিতি কমে গেছে। একনাগাড়ে জেনারেটর চালিয়ে ইন্টারনেট সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানগুলোও সেবা দিতে পারছে না। ক্ষতিগ্রস্ত বিদ্যুৎকেন্দ্র মেরামত করা না গেলে ভোগান্তি সহজে দূর হবে না।

17 November 2020

২০২১ সালে যেসব জিমেইল অ্যাকাউন্ট বন্ধ হয়ে যাবে

 


২০২১ সালে গুগলের বেশ কিছু নতুন নিয়মের মুখে পড়ছেন ব্যবহারকারীরা। যার মধ্যে আছে গুগল ফটোজে বিনামূল্যে ছবি রাখার সুবিধা তুলে নেয়া, এমনকি ইনঅ্যাকটিভ অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেয়াও।


নতুন নীতি অনুযায়ী দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে যে সমস্ত অ্যাকাউন্টগুলো ইনঅ্যাকটিভ রয়েছে, সেগুলো পুরোপুরি ডিলিট করে দেওয়া হবে। আগামী বছরের পয়লা জুন থেকেই নাকি এই নিয়ম কার্যকর হতে চলেছে।

তবে এ নিয়ম কার্যকরের আগেই প্রত্যেক অ্যাকাউন্টধারীকে ই-মেইল মারফত সতর্কবার্তা পাঠানো হবে গুগলের পক্ষ থেকে।

সম্প্রতি গুগলের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ব্যবহারকারীরা আর বিনামূল্যে গুগল ফটোজ ব্যবহার করতে পারবেন না। সেসময় আরও বলা হয়, যে সমস্ত অ্যাকাউন্ট হোল্ডাররা জিমেইল, গুগল ড্রাইভ, ডকুমেন্টস, শিটস, স্লাইডস, ড্রইংস, ফর্মস এবং জ্যামবোর্ড ফাইলস দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে ব্যবহার করেননি, তাদের সেই সমস্ত অ্যাকাউন্ট ডিলিট করে দেওয়া হবে।

অবশ্য, ইনঅ্যাক্টিভ অ্যাকাউন্ট হোল্ডারদের বিশ্বাসযোগ্য কন্টাক্টসদের কাছে তাদের অ্যাকাউন্ট সংক্রান্ত সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পৌঁছে দেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে টেক জায়ান্টের পক্ষ থেকে। যদি সেই ইউজারের অ্যাকাউন্টটি ৩-১৮ মাসের ব্যবধানে ইনঅ্যাক্টিভ থাকে।

তবে ব্যবহারকারীদের দুশ্চিন্তার কিছু নেই। আপাতত যেটা করতে পারেন, নিজের মোবাইল, ল্যাপটপ বা ডেস্কটপ নেট কানেক্ট করে নিয়মিত জিমেইল-এ লগ ইন করুন। পারলে অপ্রয়োজনীয় মিডিয়া, ফাইলস ডিলিট করে ফেলুন। এতে আপনার অ্যাকাউন্টে জায়গা তৈরি হবে। আর তা অ্যাকটিভও থাকবে নিয়মিত। ফলে অ্যাকাউন্ট ডিলিট হওয়া থেকে রেহাই পাওয়া যাবে।

মুসলিম বিয়ের রেজিস্ট্রেশন ফি খরচ কত?

 


বিয়ে সামজিক নিয়ম ও পারিবারিক বন্ধন। বিয়ের মাধ্যমে নর-নারী হৃদয়ের বন্ধনে আবদ্ধ হন। যুগলবন্দি হওয়ার এ প্রক্রিয়াকে বাংলায় ‘বিবাহ’ বা ‘বিয়ে’ বলা হয়। উর্দু ও ফারসি ভাষায় একে বলা হয় ‘শাদি’, আরবিতে বলা হয় ‘নিকাহ’। 


মুসলিম বিয়ের ক্ষেত্রে দেনমোহরের পরিমাণের ওপর ভিত্তি করে বিয়ের রেজিস্ট্রেশনের ফি নির্ধারণ হয়ে থাকে।
 
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার মুসলিম বিবাহ ও তালাক (নিবন্ধন) বিধিমালা-২০০৯; এপ্রিল ১০, ২০১১ তারিখে সংশোধন করেছে। অত্র আইনের ১০ ধারা মোতাবেক নিকাহ রেজিস্টার বিবাহ রেজিস্ট্রিকরণের জন্য ৪ লাখ টাকা পর্যন্ত দেনমোহরের ক্ষেত্রে এক হাজার বা উহার অংশ বিশেষের জন্য ১২.৫০ টাকা হারে ফি আদায় করতে পারবে। 

দেনমোহর ৪  লাখ টাকার অধিক হলে পরবর্তী প্রতি লাখে ১০০ টাকা হারে আদায় করবেন। তবে দেনমোহরের পরিমান যাই হোক না কেন সর্বনিম্ন ফি ২০০ টাকার কম হবে না।  সরকার সময়ে সময়ে প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে এই ফি পরিবর্তন ও ধার্য করে থাকে। 

রেজিস্ট্রেশন ফি জমা দিলে নিকাহ রেজিস্ট্রার একটি প্রাপ্তি রশিদ দেবেন। মুসলিম বিয়ে রেজিস্ট্রেশনের পর নিকাহ রেজিস্ট্রার বাধ্যতামূলকভাবে বর ও কনেপক্ষকে বিয়ের কাবিননামার সত্যায়িত কপি দেবেন। - সংগৃহীত

16 November 2020

ভোটে নয়, রাজপথেই হবে ‘ভোটারবিহীন সরকারের পতন’: মেজর হাফিজ উদ্দিন


 ভোটে নয়, রাজপথেই ব্যাপক গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে এই ভোটারবিহীন জালিম সরকারের পতন ঘটাতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভাইস-চেয়ারম্যান অবসরপ্রাপ্ত মেজর হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বীর বিক্রম।


সোমবার (১৬ নভেম্বর) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের তোফাজ্জ্বল হোসেন মানিক মিয়া হলে এক আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন। জিয়াউর রহমান সমাজকল্যাণ পরিষদের উদ্যোগে ‘ঐতিহাসিক ৭ নভেম্বর বিপ্লব ও সংহতি দিবসের তাৎপর্য এবং গৃহবন্দি থেকে নিঃশর্ত মুক্তির করণীয়’ শীর্ষক এ আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

মেজর হাফিজ, ‘যতদিন এই সরকার ক্ষমতায় আছে ততদিন ভোট কেন্দ্রে সাধারণ নাগরিক যেতে পারবে না। জনগণের ভোটের মাধ্যমে যেহেতু সরকার পরিবর্তনের আর সুযোগ নেই, তাই একমাত্র উপায় গণঅভ্যুত্থান।’

তিনি বলেন, ‘জনগণ যদি রাস্তায় নেমে আসে ওই যে আমি বলেছি, দুই লাখ লোক দু’দিন রাস্তায় থাকেন পালিয়ে যাবে তারা (আওয়ামী লীগ সরকার)। সেই সাহস সঞ্চয় করে আসুন আমরা আগামী দিনে এই সরকারকে বিতাড়িত করতে রাজপথে আবার নেমে আসি।’

চলমান নির্বাচনী ব্যবস্থায় নির্বাচনে দলের অংশগ্রহণ নিয়ে প্রশ্ন তুলে হাফিজ উদ্দিন বলেন, ‘কেন আমরা এ ধরনের নির্বাচনে যাই? যখন নির্বাচনে যাওয়া উচিত না তখন যাই, যখন যাওয়া উচিত তখন যাই না। যে সংসদে যাওয়া উচিত না সেই সংসদে গিয়ে আমরা বসে থাকি। যার জন্য আজকে বিএনপিকে চার‘শ ভোট দেয়। সদ্য সমাপ্ত উপনির্বাচনে সিরাজগঞ্জ-১ আসনে ওদের প্রার্থী পেয়েছে ১ লাখ ৮৮ হাজার ভোট আর আমাদের প্রার্থী পেয়েছে ৪০০ ভোট।’

‘আরে বিএনপির এজেন্টই তো হাজারেরও বেশি। আমাদের কোনও এজেন্ট ভোট কেন্দ্রে যেতে পারেন না, কোনও ভোটার ভোট কেন্দ্রে যেতে পারে না। এই হলো বাংলাদেশের গণতন্ত্র।’

তিনি বলেন, ‘যদি আমরা জিয়াউর রহমানের আদর্শের অনুসারী হয়ে থাকি তাহলে আমাদের দলেও তার প্রতিফলন থাকতে হবে। জিয়াউর রহমানের মতো সৎ হতে হবে, তাঁর মতো সাহসী হতে হবে এবং দেশের স্বার্থে কখনও কোনও ধরনের আপস করা যাবে না।’

হাফিজ বলেন, ‘বেগম খালেদা জিয়া আপস করেননি। কিন্তু আমরা অনেকে আপস করে বসে আছি। আজকে দুঃখের বিষয় খালেদা জিয়ার মতো নেত্রী তিনি বছরের পর বছর জেলে কাটালেন, আমরা কী করতে পেরেছি?’

‘উগ্রবাদীদের উত্থানে উদ্বেগ’ প্রকাশ করে বিএনপির এই ভাইস চেয়ারম্যান বলেন, ‘সবচাইতে বড় অশনিসংকেত আমি দেখতে পারছি- বিএনপি তো এখন ডাক দিলেও কাউকে রাস্তায় নামাতে পারে না। আমাদের এতো শক্তিশালী ছাত্রদল ছিলো, তাদেরকে রাস্তায় নামাতে পারে না। কেন তাদের নামাতে পারেনা আমি জানি না। কারণ আমি এই দলের এতো বিরাট কোনও নেতাও না। কিন্তু অন্যদিকে যে... “তোমারে বধিবে যে, গোকুলে বাড়িছে সে”! ইসলামী মৌলবাদীদের মিছিল দেখেন, তাদের সংখ্যা দেখেন রাজপথে।’

‘এই সরকারের পতনের মধ্য দিয়ে আওয়ামী জাহেলিয়া যুগের অবসান হবে’- মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘এ ধরনের একটা নষ্ট পঁচা সরকারকে বাংলাদেশের মানুষ বেশিদিন সহ্য করবে না। কিন্তু তার পরিবর্তন কীভাবে আসবে? কারা এদেরকে সরাবে- এটাই দেখার বিষয়। আমরা যেটা দেখতে পারবো, এটা বেশি দূরে নয়। তবে এই রাষ্ট্র যদি উদার রাজনৈতিক ধারা থেকে বেরিয়ে গিয়ে আবার মোল্লাদের খপ্পরে পড়ে এজন্য শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগ দায়ী থাকবেন। আমরা এই ধরনের পরিস্থিতি চাই না। আমরা চাই, সরকার পরিবর্তন হোক ভোটের মাধ্যমে।’

হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘দুঃখ লাগে এই সামরিক বাহিনী আমরা সৃষ্টি করেছি। কত সম্মানের পাত্র ছিলো তারা। নির্বাচনের সময়ে সেনাবাহিনী যেখানে যেতো দুর্বৃত্তরা পালিয়ে যেতো। আর এখন, গত নির্বাচনের আগের রাত্রে সব ভোট দিয়ে ফেললো আর সেনাপ্রধান বললেন, ‘এতো ভালো ভোট আমি জীবনে দেখিনি’।’

‘সুতরাং আমাদের যে শেষ ভরসার স্থল তাদের অবস্থান কী- সেটিও চিন্তা-ভাবনার বিষয়। অত্যন্ত দুঃখ লাগে সব প্রতিষ্ঠান ধ্বংস হয়ে যাক, এই সেনাবাহিনীর জন্য কষ্ট লাগে। আমরা এই সেনাবাহিনী সৃষ্টি করেছি একাত্তর সালে। ২৫ জন সেনা কর্মকর্তা পাকিস্তান আর্মিতে আমরা যারা ছিলাম আমরা বিদ্রোহ করে মুক্তিবাহিনী এবং বাংলাদেশ সেনাবাহিনী গড়ে তুলেছি। গত ৫/৭ বছরে এরা নষ্ট হয়ে গিয়েছে। এখনও সাধারণ সৈনিকেরা ভালো আছে, জুনিয়র অফিসার-মিড লেভেল অফিসাররা ভালো আছে। শীর্ষ পর্যায়ের কয়েকজন নষ্ট হয়ে গিয়েছে। আমরা সেনাবাহিনীকে রাজনীতিমুক্ত চাই। সেনাবাহিনী যেন বাংলাদেশের কোনও দলের সেনাবাহিনী নয়, জনগণের সেনাবাহিনী হয়- এটাই আমরা আশা করি।’

‘অটো প্রমোশন’ প্রসঙ্গে হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘সারা বিশ্বের মানুষ কোভিডে আক্রান্ত, যুক্তরাষ্ট্রে ১১ লাখ লোক মারা গেছে, এক কোটির ওপরে লোক আক্রান্ত। যুক্তরাজ্যেও খারাপ অবস্থা। কোনও দেশে পরীক্ষা বন্ধ হয় নাই, সব দেশে পরীক্ষা চলছে। অথচ এই এক অভাগা বাংলাদেশ, বিনা পরীক্ষায় হাজার হাজার শিক্ষার্থীদের ডিগ্রি দিয়ে দিলো। মানে এমনই মেধাশূণ্যতা এসে আমাদের গ্রাস করেছে, এমনই অপদার্থের দেশ বাংলাদেশ। একটা লোকও মাথা খাটিয়ে বললো না, একটা লোককে জিজ্ঞাসাও হয়তো করে নাই যে- ভাই, কীভাবে আমরা পরীক্ষাটা নিতে পারি?’

মেজর হাফিজ আরও বলেন, ‘সারা পৃথিবীতে পরীক্ষা চলছে, যাদের লক্ষ লক্ষ লোক মারা যাচ্ছে তারা পরীক্ষা নিতে পারছে। আর আমাদের সরকারি হিসেবে ৬ হাজার লোক মারা গেছে- আমরা কেন পরীক্ষা নিতে পারছি না। আমাদের জাতিকে মূর্খের জাতিতে পরিণত করার ষড়যন্ত্র হচ্ছে। কী শিক্ষাব্যবস্থা এখন দেশে আছে? পরিকল্পিভাবে দেশের শিক্ষাব্যবস্থাকে ধ্বংস করে দিয়েছে সরকার। এক অদ্ভুত উটের পিঠে চলেছে বাংলাদেশ। দেশকে মেধাশূণ্য করতে তারা (সরকার) শিক্ষার্থীদের এই অটো প্রমোশন দিলেন।’

‘মেধাবী লোক সরকারের শত্রু’ উল্লেখ করে হাফিজ বলেন, ‘মেধাবী লোক হচ্ছে এ সরকারের শত্রু। ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে (নোবেল বিজয়ী) সারা বিশ্ব কত সম্মান করে। পৃথিবীর যেখানে যাবেন রাষ্ট্রপতি বাড়ির বাইরে এসে গাড়ির দরজা খুলে দিয়ে তাকে আমন্ত্রণ জানিয়ে নিয়ে যাবেন। অথচ আমাদের দেশে তার বিরুদ্ধে ওয়ারেন্ট জারি হয়, তাকে পালিয়ে বেড়াতে হয়। তাকে সুদখোর বলা হয়।’

তিনি বলেন, ‘এভাবে তো এই সরকার দেশ থেকে মেধাবী ব্যক্তিদের বিতাড়িত করে দিয়ে মূর্খের রাজত্ব কায়েম করেছে। হয়তো আরেও করবে ভবিষ্যতে। গোষ্ঠীপ্রীতি, খালি বংশের সুনাম শুনবেন, কার কী কী কৃতিত্ব জানি না। আমার দুঃখ লাগে, এ দেশটা আমরা সৃষ্টি করেছি, বাংলাদেশের মানুষ ইস্পাতকঠিন ঐক্যের মাধ্যমে এ দেশটাকে স্বাধীন করেছে, একাত্তরের যুদ্ধ ছিলো জনতার যুদ্ধ, কত ত্যাগ-তিতিক্ষার বিনিময়ে এ দেশ স্বাধীন হয়েছে, আর আজকে এর ফল বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রকে তারা (বর্তমান সরকার) নষ্ট করেছে।’

‘৭ নভেম্বর সিপাহী-জনতা বিপ্লবে কর্নেল তাহের সেনাবাহিনীকে ধ্বংস করে দেয়ার ষড়যন্ত্র করেছিলো’ উল্লেখ করে জিয়াউর রহমানের সাহসী ভূমিকার কথা তুলে ধরেন সাবেক এ সেনা কর্মকর্তা।

সংগঠনের সভাপতি গিয়াস উদ্দিন খোকনের পরিচালনায় আলোচনা সভায় বিএনপির আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক সাবেক প্রতিমন্ত্রী আ ন ম এহছানুল হক মিলন, লেবার পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, জাতীয় পার্টি (কাজী জাফর) প্রেসিডিয়াম সদস্য আহসান হাবিব লিংকন, বিএনপির তথ্য ও গবেষণা সহ-সম্পাদক কাদের গনি চৌধুরী, নির্বাহী কমিটির সদস্য একেএম আবুল কালাম আজাদ ও কৃষকদল নেতা কে এম রকিবুল ইসলাম রিপন প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

জনসাধারণকে মাস্ক পরাতে ঢাকায় শুরু হবে অভিযান

 


করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে কঠোর হচ্ছে সরকার। জনসাধারণকে মাস্ক পরাসহ সচেতনতা বাড়াতে ঢাকায় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হবে।

আজ সোমবার মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম এ কথা জানান।

খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম জানান, এ বিষয়ে ইতিমধ্যে গতকাল সংশ্লিষ্টদের বলে দেওয়া হয়েছে। দু–এক দিনের মধ্যে ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযান পরিচালনা করবেন।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বাড়ছে। এ জন্য সবাইকে আরেকটু প্রস্তুতি নিতে বলা হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভার ভার্চ্যুয়াল বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়।

বৈঠকে সংশ্লিষ্ট সবাইকে প্রাতিষ্ঠানিক আর্থিক হিসাবের মধ্যে আনাসহ কয়েকটি উদ্দেশে ‘জাতীয় আর্থিক অন্তর্ভুক্তি কৌশলের’ খসড়া অনুমোদন দেওয়া হয়। বাংলাদেশ ও তুরস্কের মধ্যে একটি চুক্তির খসড়া অনুমোদন দেওয়া হয় বৈঠকে।

এ ছাড়া জাতীয় পারমাণবিক ও তেজস্ক্রিয়তাবিষয়ক জরুরি অবস্থায় প্রস্তুতি ও সাড়াদান পরিকল্পনার খসড়াও অনুমোদন দেওয়া হয় বৈঠকে।

15 November 2020

১৫ বছর ধরে কবরস্থানে বাস করছে পরিবারটি


 নিজের কোন জায়গা-জমি নেই।  থাকায় জন্য কবরস্থানের ১ শতক জমির ওপর খুবড়ে ঘর বেঁধেছেন।  ওই ঘরে ১৫ বছর যাবৎ পরিবার-পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছে খুলনার পাইকগাছার বান্দিকাটী গ্রামের ভূমিহীন ও গৃহহীন ভ্যানচালক আল-মামুন গাজী।

শনিবার (১৪ নভেম্বর) এমন খবর পেয়ে পরিবারটিকে বসবাসের সু-ব্যবস্থা করার আশ্বাস দিয়েছেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভুমি) মুহাম্মদ আরাফাতুল আলম।  মামুন ওই এলাকার মৃত আব্দুর রহিম গাজীর ছেলে।

জানা যায়, দরিদ্র পরিবারে জন্ম হলেও মামুনদের পারিবারিকভাবে পৈত্রিক ভিটা ও কিছু জায়গা জমি ছিল।  অসুস্থ্য পিতা জীবিত থাকাকালীন সময়ে পারিবারিক সকল সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করা হয় মামুনকে।  সেই থেকে স্ত্রী ও ৩ সন্তান নিয়ে পারিবারিক কবরস্থানের ১ শতক জায়গার ওপর একটি খুপড়ি ঘর তৈরি করে বসবাস করে আসছে পরিবারটি।

মামুন জানায়, সে পেশায় একজন ভ্যানচালক, ভ্যানচালিয়ে কোন রকমে সংসার চালায়।  কোন জমি কেনার সামর্থ তার নেই।  কবর স্থানের এক কোনায় একটি খুপড়ি ঘর তৈরি করে কোন রকমে বসবাস করে আসছে।  অল্প জায়গার মধ্যে থাকা, খাওয়া ও বাথরুমসহ প্রয়োজনীয় সকল কাজ সম্পন্ন করতে হয়।  অনেকটাই নিরুপায় হয়ে পরিবার পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবন-যাপন করছিল মামুন।  

মামুন বলে, শুনেছি মানবতার জননী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যাদের ঘর নাই, তাদের পাঁকা ঘর তৈরি করে দিচ্ছে। এমন একটি ঘর তৈরি করে দিলে জীবনের পড়ন্ত বেলায় এসে পরিবার পরিজন নিয়ে একটু শান্তিতে বসবাস করতে পারতাম।

সহকারী কমিশনার (ভূমি) মুহাম্মদ আরাফাতুল আলম জানান, এমন খবরটি শুনে মামুন যেখানে বসবাস করছে সেখানে গিয়ে তার পরিবারের সঙ্গে কথা বলেছি।  দেখে মনে হয়েছে সত্যিই মামুন ও তার পরিবার মানবেতর জীবন যাপন করছে।  প্রকৃত পক্ষে সে ভূমিহীন কিনা সেটা যাচাই বাছাই করে দেখা হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, সে যদি ভূমিহীন হয়ে থাকে মুজিব শতবর্ষে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে ঘোষণা দিয়েছেন দেশের একজন মানুষও গৃহহীন থাকবে না, এ কর্মসূচির আওতায় মামুনকে অন্তর্ভূক্ত করা যায় কিনা বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্ট উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলাপ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় আরও ২১ জনের মৃত্যু

 


প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসে দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ২১ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ১৯৪ জনে। এছাড়া এ সময়ের মধ্যে নতুন করে শনাক্ত হয়েছে আরও ১ হাজার ৮৩৭ জন। ফলে দেশে মোট শনাক্তের সংখ্যা দাঁড়ালো ৪ লাখ ৩২ হাজার ৩৩৩ জন।


রবিবার (১৫ নভেম্বর) স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, মারা যাওয়াদের মধ্যে ১৭ জন পুরুষ ও ৪ জন নারী। এছাড়া ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন ১ হাজার ৬৯৩ জন। এ পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ৩ লাখ ৪৯ হাজার ৫৪২ জন।

হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমির নির্বাচিত হয়েছেন আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী

 


হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমির নির্বাচিত হয়েছেন আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী।  এছাড়া মহাসচিব হিসাবে নির্বাচিত হয়েছেন ঢাকার জামিয়া মাদানিয়া বারিধারা মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল ও হেফাজতের ঢাকা মহানগর শাখার আমির নূর হোসাইন কাসেমী।


রবিবার (১৫ নভেম্বর) চট্টগ্রামের হাটহাজারী মাদরাসায় মিলনায়তনে আয়োজিত সম্মেলনে তাঁকে আমির নির্বাচিত করা হয়। 

হেফাজতের আমির নির্বাচিত হয়ে আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী বলেছেন, আমি এ পদ গ্রহণ করতে চাইনি।  মুরুব্বিরা জোর করে এ দায়িত্ব আমাকে দিয়েছেন।  আপনারা আমার জন্য দোয়া করবেন, যেন এ দায়িত্ব পালন করতে পারি। 

প্রসঙ্গত, গত ১৮ সেপ্টেম্বর হেফাজত আমীরের মৃত্যুতে সংগঠনটির আমীরের পদ শূন্য হয়।  এর আগে গত কয়েক বছর ধরে মাওলানা আনাস অনুসারীদের সঙ্গে মহাসচিব জুনায়েদ বাবুনগরীর দ্বন্দ্ব ছিল চরমে।  যার সূত্র ধরে চলতি বছরের জুন মাসে হাটহাজারী মাদ্রাসার সহযোগী পরিচালকের পদ থেকে বাবুনগরীকে সরিয়ে দিয়ে মাওলানা শেখ আহমদকে সে দায়িত্ব দেয়া হয়েছিল।

এরই জের ধরে গত সেপ্টেম্বরে হাটহাজারীতে টানা দুই দিন ছাত্র বিক্ষোভের মুখে আল্লামা শফী স্বেচ্ছায় হাটহাজারী মাদ্রাসার মহাপরিচালকের পদ থেকে অব্যাহতি নেন এবং আনাস মাদানীকে অব্যাহতিসহ বেশ কিছু সিদ্ধাস্ত নেন মাদ্রাসার মজলিসে শূরা।  এর একদির পরই মুত্যুবরণ করেন আল্লামা শফী।  তখন থেকেই হাটহাজারী মাদ্রাসা ও হেফাজতে ইসলামে একক প্রভাব বাড়ে আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরীর।  এরপর থেকে কোণঠাসা হয়ে পড়েন যান আনাস অনুসারীরা। 

12 November 2020

মগবাজারে ঘরে ঝুলন্ত বাবা-ছেলের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ

 


রাজধানীর মগবাজারের নয়াটোলায় একটি ভবনের এক ফ্ল্যাট থেকে বাবা ও কিশোর ছেলের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। বুধবার বিকালে দুজনের লাশ উদ্ধারের কথা জানান হাতিঝিল থানার পরিদর্শক (অপারেশন) গোলাম আজম।


নিহতরা হলেন, খাইরুল ইসলাম সোহাগ (৫৫) ও তার ১৪ বছর বয়সী ছেলে শাহারাত ইসলাম আরিন। 

সোহাগের বাড়ি লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ উপজেলায় জানিয়ে গোলাম আজম বলেন, সন্ধ্যার পর বাবা-ছেলের লাশ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়।

তিনি বলেন, সোহাগ পিডব্লিউডির একজন প্রথম শ্রেণির ঠিকাদার ছিলেন। তার একমাত্র ছেলে আরিন প্রতিবন্ধী ছিলেন।

সোহাগের স্ত্রীর বরাত দিয়ে পুলিশ কর্মকর্তা আজম জানান, সকাল ৯টায় স্বামী-সন্তানকে রেখে স্ত্রী বাজারে যান। বেলা ১টার দিকে ফিরে ভেতর থেকে দরজা বন্ধ পেয়ে ডাকাডাকি করেন। কিন্তু কোনো সাড়া না পেয়ে অন্য ফ্ল্যাটের লোকজনকে ডেকে আনেন। পরে দারোয়ান বাড়িওয়ালার কাছ থেক বিকল্প চাবি এনে দরজা খুলে দুইজনকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পান।

বাবা পাঁচ তলার ওই ফ্ল্যাটের ড্রইং রুমে এবং ছেলে বেড রুমে গলায় নিজের লুঙ্গি পেঁচিয়ে ফ্যানের সাথে ঝুলছিলেন বলে পরিদর্শক গোলাম আজম জানান।

সোহাগের স্বজনদের বরাত দিয়ে তিনি বলেন, বেশ কয়েক বছর ধরে ঠিকাদারিতে ‘কয়েক কোটি টাকা’ ক্ষতি হয়েছে সোহাগের। এ কারণে গত দুই বছর ধরে মানসিক সমস্যায় ভুগছিলেন তিনি। এজন্য তাকে মানসিক চিকিৎসাও নিতে হয়েছে।

নিজের অসুস্থতা, ছেলে প্রতিবন্ধী, ব্যবসায় ক্ষতি এসবের কারণে হতাশায় তিনি ‘চলো আমরা তিনজনে মিলে আত্মহত্যা করি’ বলে স্ত্রীকে প্রায় সময়ই প্ররোচিত করতেন।

10 November 2020

করোনার ভ্যাকসিন ৯০ শতাংশ কার্যকর : মার্কিন-জার্মান কোম্পানি

 


করোনার (কোভিড-১৯) দ্বিতীয় আঘাত শুরু হলেও এখনো দেখা মিলেনি কার্যকর কোনো প্রতিষেধকের। প্রতিদিনই বাড়ছে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা। এমতাবস্তায় নিজের তৈরি ভ্যাকসিনকে ৯০ শতাংশের অধিক কার্যকর বলে দাবি করেছে মার্কিন কোম্পানি ফাইজার ও জার্মান বায়োএনটেক।

এই দুই সংস্থা যৌথভাবে এই করোনার ভ্যাকসিনটি তৈরি করে। যা তৃতীয় দফার ট্রায়ালে ৯০ শতাংশ অধিক কার্যকর বলে প্রমাণিত হয়েছে বলে দাবি করেছে কোম্পানি দুটি। এক বিবৃতিতে তারা এই তথ্য জানায়। 

ফাইজারের সিইও ‌অ‌্যালবার্ট বোরলা জানান, ভ্যাকসিন নিয়ে করা গবেষণায় নতুন মাইলফলক ছুঁতে পেরেছি। এর তৃতীয় দফার ট্রায়ালের ফলাফলই তার প্রমাণ। এই দিনটি মানবজাতি তথা বিজ্ঞানের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দিন বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

ফাইজারের ভ্যাকসিন ক্লিনিক্যাল রিসার্চ অ্যান্ড ডেভলপমেন্টের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট উইলিয়াম গ্রুবার জানান, গবেষণায় অসাধারণ ফল পাওয়া গেছে। এবার তারা করোনা মহামারীকে শক্তভাবে মোকাবিলা করতে পারবেন বলেও জানান তিনি।

এ বিষয়ে ফাইজার জানায়, প্রাথমিকভাবে দেখা গেছে, এই ভ্যাকসিনের প্রথম ডোজ গ্রহণের ২৮ দিনের মধ্যে আর দ্বিতীয় ডোজ নেয়ার সাত দিনের মধ্যে স্বেচ্ছাসেবকদের শরীরে করোনার প্রতিরোধের ক্ষমতা তৈরি হয়ে যাচ্ছে।

চলতি বছরের মধ্যেই ভ্যাকসিনের পাঁচ কোটি ডোজ বিভিন্ন দেশে পাঠাবে তারা। আর ২০২১ সালের মধ্যে ১৩০ কোটি প্রতিষেধক তৈরির টার্গেট রয়েছে বলেও জানিয়েছে এই কোম্পানি।

আজ শহীদ নূর হোসেন দিবস: ১৯৮৭ সালের ১০ নভেম্বরের ঘটনাপ্রবাহ

 বুকে লেখা ''স্বৈরাচার নিপাত যাক'' আর পিঠে লেখা ''গণতন্ত্র মুক্তি পাক''- একজন তরুণ ঢাকায় সচিবালয় ঘেরাও কর্মসূচীতে গিয়ে গুলিস্তানের জিরো পয়েন্টে পুলিশ-বিডিআরের (বিডিআর-এর পরিবর্তিত নাম এখন বিজিবি) গুলিতে নিহত হন

সেইদিন পুলিশের গুলিতে আরও দুইজন নিহত হয়েছিল। কিন্তু শরীরে গণতন্ত্রের বার্তা লেখা এই যুবক গুলিতে নিহত হওয়ার পর সামরিক শাসনবিরোধী গণ-আন্দোলনের প্রতীকে পরিণত হয়েছিলেন।

১৯৮৭ সালের ১০ই নভেম্বর যখন নূর হোসেন পুলিশ-বিডিআরের গুলিতে নিহত হন, তখনকার সংবাদপত্রে সেই ঘটনা ব্যাপক গুরুত্ব পেয়েছিল। এরপরের কয়েকদিন জুড়ে ঢাকায় বিক্ষোভ-সংঘর্ষ চলতে থাকে।

সেই সময়ে এরশাদ সরকারের উপ-প্রধানমন্ত্রী এবং বর্তমানে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমেদ তার 'চলমান ইতিহাস: জীবনের কিছু সময় কিছু কথা:১৯৮৩-১৯৯০' গ্রন্থে ১৯৮৭ সালের ১০ই নভেম্বর তারিখের আন্দোলন, গুলিতে হতাহতের কথা উল্লেখ করলেও সেখানে নূর হোসেনের প্রসঙ্গে কিছু লেখেননি।

মি. আহমেদ লিখেছেন, ১৯৮৭ সালের অক্টোবর নাগাদ আন্দোলন দানা বেঁধে উঠতে শুরু করে।....এমতাবস্থায় দুই প্রধান রাজনৈতিক জোট একটি যুক্ত ঘোষণার মাধ্যমে ১০ নভেম্বর রাজধানীতে ১০ লাখ লোকের এক বিশাল বিক্ষোভ সমাবেশ ঘটানোর ঐক্যবদ্ধ কর্মসূচী গ্রহণ করে।....এরশাদ এবং তাঁর সরকার এক কঠিন অগ্নিপরীক্ষার সম্মুখীন হয়। ''

সেই সময়কার পরিস্থিতির বর্ণনা করতে গিয়ে মওদুদ আহমেদ তার বইতে লিখেছেন, ''বিরোধী দলসমুহের এই কর্মসূচীকে প্রতিহত করার জন্য সরকার দেশব্যাপী জরুরি অবস্থা ঘোষণা করে জনসমাবেশ ও মিছিল-সমাবেশ নিষিদ্ধ করে দেয়, রাজনৈতিক নেতা ও কর্মীদের আটক করা হয়, গ্রামাঞ্চল থেকে লোকজন যাতে শহরের দিকে আসতে না পারে, সে উদ্দেশ্যে লঞ্চ ও ট্রেনের চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয় ও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য নিয়মিত আইন রক্ষাকারী বাহিনীর পাশাপাশি সেনাবাহিনী ও বিডিআর মোতায়েন করা হয়।''

''সরকারের গৃহীত এসব পদক্ষেপ বানচাল করার জন্য বিরোধী দলগুলো পর্যাপ্ত জনসমর্থন সংগ্রহ করতে পারেনি। ফলে ঢাকায় অনুষ্ঠিত জনসভাটি অন্য জনসভার চেয়ে আকারে বড় হলেও তেন কোন সফলতা অর্জন করতে পারেনি।''

''এভাবে ১০ নভেম্বর সরকার বিরোধী আন্দোলন সরকারের দৃষ্টিতে ব্যর্থতায় পর্যবসিত হলেও এরশাদ সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনের তীব্রতা কমেনি, বরং ক্রমশ তা ঘনীভূত হতে থাকে।'' লিখেছেন মওদুদ আহমেদ।

কিন্তু বইয়ের কোথাও নূর হোসেনের উল্লেখ করেননি তখনকার উপ-প্রধানমন্ত্রী, পরবর্তীতে এরশাদর সরকারের প্রধানমন্ত্রী মওদুদ আহমেদ। এ থেকে বোঝা যায়, নূর হোসেনের মৃত্যুর বিষয়টি সরকারের ওপর মহল ততোটা গুরুত্বের সঙ্গে নেয়নি।

এরশাদ সরকারে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রী ছিলেন আনোয়ার হোসেন মঞ্জু। তিনি বিবিসি বাংলাকে বলছেন, ''সেই মৃত্যু নিয়ে তখনো সরকারের ওপর মহলে কোন আলোচনা হয়নি, পরবর্তীতেও হয়নি। সরকারে বা দলের মধ্যে এ নিয়ে কোন প্রতিক্রিয়া হয়নি।''

''তৎকালীন বিরোধী দলের সঙ্গে একপ্রকার আলোচনা হয়েছিল যে, তারা মিছিল নিয়ে এসে চলে যাবেন। কিন্তু তারা এসে একটা অবস্থান নিয়ে নিয়েছিলেন। তখন পুলিশের সাথে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছিল। নূর হোসেন কোথা থেকে আসলো, আমার জানা নেই।''

এ নিয়ে তখনকার মন্ত্রিসভায় বা দলে কখনো কোন আলোচনা হয়নি, বলে বলছেন মি. মঞ্জু।

সেই সময়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্বে ছিলেন মেজর জেনারেল (অব.) মাহমুদুল হাসান আর উপ-প্রধানমন্ত্রী ছিলেন শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন (বর্তমানে বিএনপি নেতা), যারা এই বিষয়ে কথা বলতে চাননি।

বাংলাদেশের ছাত্র আন্দোলনের ইতিহাস, এরশাদের সময়কাল বইয়ে ড. মোহাম্মদ হাননান লিখেছেন, নূর হোসেন নিহত হওয়ার পরের দিন, ১১ নভেম্বর (১৯৮৭) ফরিদপুরের চরভদ্রাসনে এক জনসভায় জেনারেল এরশাদ তার পরিবর্তে বিরোধী দলের নেতাদেরই পদত্যাগ করার পরামর্শ দেন।

তিনি বলেন: ''১০ নভেম্বর বিরোধী দল ৫০ লাখ লোকের ঢাকা সমাবেশ করবে বলে পরিকল্পনা করছিল, কিন্তু তারা ৫ হাজার লোকও আনতে পারেনি।''

তখনকার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি প্রেসনোটে বিরোধীদের দেখামাত্র গুলি কারর কথা বলা হয়। ১২ নভেম্বর সংঘর্ষে একজন পুলিশসহ দুইজন নিহত হন।

১০ই নভেম্বরের ঘটনা সম্পর্কে সরকারি প্রেসনোটে বলা হয়, ''আন্দোলনের নামে পরিচালিত ধ্বংসাত্মক তৎপরতায় বিপন্ন হয়ে পড়া জনসাধারণের জানমাল ও সরকারি সম্পত্তি রক্ষা করতে সরকার দৃঢ় প্রতিজ্ঞ।''

''শান্তি শৃঙ্খলা রক্ষা ও জনজীবনে স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করা সরকারের পবিত্র দায়িত্ব। সরকার আশা করেন যে, সংশ্লিষ্ট সকল মহল ভবিষ্যতে এ ধরণের কর্মতৎপরতা হতে বিরত থাকবেন'', উল্লেখ করা হয় ওই প্রেসনোটে।

অবশ্য নূর হোসেনের মৃত্যুর পরবর্তী কয়েকদিন পর্যন্ত তার নাম ততোটা পরিচিত হয়ে ওঠেনি। বুকে-পিঠে গণতন্ত্রের বাক্য লেখা থাকলেও অনেকেই তার নাম জানতেন না। সেইদিন নূর হোসেনের পাশাপাশি পুলিশের গুলিতে আরো দুইজন কর্মীও নিহত হয়েছিলেন।

তবে বুকে পিঠে গণতন্ত্রের বাক্য লেখা নূর হোসেনের কয়েকটি ছবি ছড়িয়ে পড়ার পর থেকে নূর হোসেন সামরিক শাসন বিরোধী গণ-আন্দোলনের প্রতীক হয়ে ওঠেন।

নূর হোসেন নিহত হওয়ার পরের দিন, ১১ই নভেম্বর ১৯৮৭ সালে দৈনিক বাংলার শিরোনাম ছিল, "ঢাকায় মিছিল সংঘর্ষ, পুলিশের গুলিতে নিহত ৪"। বাংলাদেশ টাইমসের শিরোনাম ছিল, "থ্রি কিলড, হানড্রেড হার্ট"।

লেখক ও গবেষক মহিউদ্দিন আহমেদ বিবিসি বাংলাকে বলছেন, ''নূর হোসেনের আগে ও পরেও আরও অনেকেই আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে মারা গেছেন। কিন্তু এসব মৃত্যু নিয়ে তখনকার সরকার বা দলের মধ্যে কোন মাথাব্যথা ছিল বলে দেখা যায়নি। একদিকে আন্দোলন চলেছে, আরেকদিকে পুলিশের সাথে সংঘর্ষ-সহিংসতায় হয়েছে। নূর হোসেনের মৃত্যু নিয়েও ক্ষমতায় থাকার সময় জাতীয় পার্টি বা এরশাদ সরকারের মধ্যে কোন প্রতিক্রিয়া দেখা যায়নি।''

''তবে এরপর যে আন্দোলন গড়ে উঠেছিল, তারই ফলশ্রুতিতে কয়েক সপ্তাহ পর ৬ই ডিসেম্বর এরশাদ পার্লামেন্ট ভেঙ্গে দিতে বাধ্য হন। এবং আন্দোলনের পরবর্তী ধারাবাহিকতায় তার পতনও ঘটে।'' তিনি বলছেন।

তিনি জানান, তবে ১৯৯৬ সালে কারাগার থেকে বের হওয়ার পর বাংলাদেশের জাতীয় সংসদে নূর হোসেনের মৃত্যুর জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমা প্রার্থনা করেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ।