চলতি অর্থবছরের আসন্ন বাজেটে জনপ্রশাসন খাতের পর সবচেয়ে বেশি বরাদ্দ বাড়ছে শিক্ষা খাতে। এ খাতে চলতি অর্থবছরের চেয়ে ৮ হাজার ৭২১ কোটি টাকা বাড়িয়ে ৮৫ হাজার ৭৬০ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করা হচ্ছে।
পরিবহন ও যোগাযোগ খাতে ৬ হাজার ৯১ কোটি টাকা বাড়িয়ে ৬৪ হাজার ৫৮৭ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করা হবে। স্বাস্থ্য খাতে ৫ হাজার ৫৫৪ কোটি টাকা বাড়িয়ে ২৯ হাজার ২৪৬ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করা হবে।
জনপ্রশাসন খাতে সর্বোচ্চ ৪০ হাজার ৫৭৭ কোটি টাকা বাড়িয়ে ১ লাখ ৮০ হাজার ৭১৫ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করা হবে।
চলতি ২০১৯-২০২০ অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটের চেয়ে ৬৬ হাজার ৪২৩ কোটি টাকা বাড়িয়ে আগামী অর্থবছরের জন্য ৫ লাখ ৬৮ হাজার কোটি টাকার বাজেট পেশ করবেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। চলতি অর্থবছরে মূল বাজেটের আকার ছিল ৫ লাখ ২৩ হাজার ১১০ কোটি টাকা, তা সংশোধনের পর দাঁড়ায় ৫ লাখ ১ হাজার ৫৭৭ কোটি টাকা। এ নিয়ে রাইজিংবিডি একাধিক প্রতিবেদন ছাপিয়েছে।
বাজেট নিয়ে সর্বশেষ প্রাপ্ত তথ্য থেকে দেখা যায়, নতুন বাজেটে সর্বোচ্চ ব্যয় হবে সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়/বিভাগ, গ্রুপ ভিত্তিক খাতে। এ খাতে নিট ব্যয় হবে ৪ লাখ ৪ হাজার ৫১০ কোটি টাকা। সংশোধিত বাজেটে এর পরিমাণ ৩ লাখ ৭৪ হাজার ৮০৮ কোটি টাকা।
দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ব্যয় ধরা হয়েছে সুদ পরিশোধ খাতে। এজন্য ৬৩ হাজার ৮০১ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করা হচ্ছে।
ভর্তুকি ও প্রণোদনা খাতে বরাদ্দ বাড়ছে ৬ হাজার ৭০৫ কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটে এ খাতে বরাদ্দ রয়েছে ৩১ হাজার ৯৩৮ কোটি টাকা। আর আগামী বাজেটে প্রস্তাব করা হচ্ছে ৩৮হাজার ৬৮৮ কোটি টাকা।
পেনশন ও গ্র্যাচুইটি খাতে বরাদ্দ খুব সামান্যই বাড়ানোর প্রস্তাব করা হবে। এ খাতে বরাদ্দ বাড়বে ৬১৬ কোটি টাকা। এ খাতে বরাদ্দের প্রস্তাব করা হবে ২৭ হাজার ৭০৬ কোটি টাকা। চলতি বছরে সংশোধিত বাজেটে এ খাতে বরাদ্দ রয়েছে ২৭ হাজার ৯০ কোটি টাকা।
জনপ্রশাসন খাতে ব্যয় প্রস্তাব করা হবে ১ লাখ ৮০ হাজার ৭১৫ কোটি টাকা। স্থানীয় সরকার ও পল্লী উন্নয়ন খাতে ৩৯ হাজার ৫৭৩ কোটি টাকা, প্রতিরক্ষা খাতে ৩৪ হাজার ৮৮২ কোটি টাকা এবং জনশৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা খাতে ২৮ হাজার ৬৬৮ কোটি টাকা বরাদ্দের জন্য প্রস্তাব করা হবে।
শিক্ষা ও প্রযুক্তি খাতে ৮৫ হাজার ৭৬০ কোটি টাকা, স্বাস্থ্য খাতে ২৯ হাজার ২৪৬ কোটি টাকা, সামাজিক নিরাপত্তা ও কল্যাণ খাতের জন্য ৩২ হাজার ১৬৬ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করা হবে। গৃহায়ন খাতে ৬ হাজার ৯৩৬ কোটি টাকা, জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাতে ২৬ হাজার ৭৫৮ কোটি টাকা, কৃষি খাতে ২৯ হাজার ৯৮৩ কোটি টাকা (প্রণোদনার অর্থ যোগ করা হয়নি), শিল্প ও অর্থনৈতিক সার্ভিস খাতের জন্য ৩ হাজার ৯৪০ কোটি টাকা, পরিবহন ও যোগাযোগ খাতের জন্য ৬৪ হাজার ৫৮৭ কোটি টাকা ব্যয় বরাদ্দের প্রস্তাব করা হবে।
প্রস্তাবিত বাজেটের বরাদ্দের পরিসংখ্যান থেকে দেখা যায়, চলতি অর্থবছরের তুলনায় বরাদ্দ বাড়ছে জনপ্রশাসন খাতে ৪০ হাজার ৫৭৭ কোটি টাকা, প্রতিরক্ষা খাতে বরাদ্দ বাড়বে ১ হাজার ৭৭৬ কোটি টাকা, জনশৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা খাতে ১ হাজার ২৩১ কোটি টাকা, শিক্ষা খাতে বরাদ্দ বাড়বে ৮ হাজার ৭২১ কোটি টাকা, স্বাস্থ্য খাতে ৫ হাজার ৫৫৪ কোটি টাকা, সামাজিক নিরাপত্তা ও কল্যাণ খাতে ১ হাজার ৬৬ কোটি টাকা, জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাতে ৬০৪ কোটি টাকা, কৃষি খাতে ২ হাজার ৯৬০ কোটি টাকা, পরিবহন ও যোগাযোগ খাতে ৬ হাজার ৯১ কোটি টাকা এবং বিনোদন, সংস্কৃতি ও ধর্ম খাতে ৫১ কোটি টাকা।
তবে চলতি অর্থবছরের বাজেটের চেয়ে নতুন বাজেটে স্থানীয় সরকার ও পল্লী উন্নয়ন খাতে ৯০০ কোটি টাকা ব্যয় কমানোর প্রস্তাব করা হবে। সেই সঙ্গে গৃহায়ন খাতে ১ হাজার ৩১০ কোটি টাকা এবং শিল্প ও অর্থনৈতিক সার্ভিস খাতে ৭৯৮ কোটি টাকা বরাদ্দ কমানোর প্রস্তাব করা হবে।