13 June 2020

হজ হবে সীমিত মুসল্লি নিয়ে অথবা হজ বাতিল হতে পারে এমন ইঙ্গিত করলেন-সৌদি সরকারের


বৈশ্বিক মহামারি করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ দিন দিন বেড়েই চলেছে। এই অবস্থায় নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে মুসলিমদের প্রধান ধর্মীয় আয়োজন হজ বন্ধ রাখার ইঙ্গিত দিয়েছে সৌদি সরকার। দেশটির হজ ও ওমরাহ মন্ত্রণালয়ের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এ আশঙ্কা প্রকাশ করে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসবে বলে জানিয়েছেন। শুক্রবার (১২ জুন) যুক্তরাজ্যভিত্তিক প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম ফিন্যান্সিয়াল টাইমস এ খবর দিয়েছে করেছে। 

ফিন্যান্সিয়াল টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়, হজ পালন বা বাতিল বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে সার্বিক দিক অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে বিবেচনা করছে সৌদি সরকার। আর আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলেও জানিয়েছেন সৌদি হজ ও ওমরাহ মন্ত্রণালয়ের ওই কর্মকর্তা।

তিনি বলেন, স্বাস্থ্যবিধি মেনে সীমিত পরিসরে কমসংখ্যক মুসল্লি নিয়ে এবারের হজ আয়োজনের একটি প্রস্তাব আমাদের কাছে এসেছে। সেটিও বিবেচনায় নেওয়া হচ্ছে। তবে যেকোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রেই সবার আগে স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তার বিষয় গুরুত্ব দেওয়া হবে।

করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়তে থাকলে এ বছর  হজ পালন নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়। হজের আর দেড় মাসের কিছু বেশি সময় বাকি থাকলেও এখনো এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানাতে পারেনি সৌদি সরকার। 

তবে গত সপ্তাহেই বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, এ বছর সীমিত পরিসরে হজ পালনের অনুমতি দেওয়া হতে পারে। সেক্ষেত্রে স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় ২০ শতাংশ মানুষ হজের অনুমতি পাবেন।

সৌদি সরকার এ বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত না নিতে পারলেও মালয়েশিয়া জানিয়ে দিয়েছে, তাদের দেশ থেকে কাউকে হজ পালন করতে পাঠানো হবে না। আরব নিউজের এক খবরে বলা হয় দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পরামর্শ নিয়ে মালয়েশিয়ান হজ পিলগ্রিমস ফান্ড বোর্ড এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এছাড়া ইন্দোনেশিয়া, ব্রুনেই ও সিঙ্গাপুরও একই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

প্রতিবছর বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে প্রায় ২৫ লাখ মুসলিম হজ পালনের উদ্দেশ্যে সৌদি আরব যান। রয়টার্সের প্রতিবেদন অনুযায়ী, সৌদি সরকার সীমিত পরিসরে হজের সিদ্ধান্ত নিলে এ বছর হয়তো ৫ লাখ মানুষ হজের অনুমতি পেতে পারেন। তবে সেক্ষেত্রেও রয়েছে শর্ত দেয়া হবে— বয়স্ক ও শারীরিকভাবে অসুস্থরা হজের অনুমতি পাবেন না। যারা হজ পালন করবেন, তাদেরও কঠোর স্বাস্থ্য পরীক্ষার মধ্য দিয়ে যেতে হবে। আর যেসব দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ অনেক বেশি, সেসব দেশের কাউকে হজ পালনের অনুমতি দেওয়া হবে না।

করোনা ভাইরাস বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়তে থাকলে বাদ পড়েনি সৌদি আরবও। সংক্রমণ ঠেকাতে মার্চের শুরুতেই বিদেশি নাগরিকদের জন্য মক্কা ও মদিনায় ওমরাহ পালন ও ধর্মীয় সব আয়োজন নিষিদ্ধ করা হয়। বাতিল করা হয় আন্তর্জাতিক ফ্লাইটও। 

এত উদ্যোগের পরেও দেশটিতে সংক্রমণ বেড়েই চলেছে। ওয়ার্ল্ডোমিটারের তথ্য অনুযায়ী, শুক্রবার মধ্যরাত পর্যন্ত এই সংখ্যা ১ লাখ ১৯ হাজার ৯৪২। দেশটিতে ৮৯৩ জন মারা গেছেন এই ভাইরাসে সংক্রমিত হয়ে।

পবিত্র হজ পালনে সৌদি আরব যেতে বাংলাদেশের ৬৫ হাজার ৫১২ জন মুসল্লি নিবন্ধন শেষ করে অপেক্ষায় রয়েছেন। ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলছেন, সৌদি সরকার যে সিদ্ধান্ত জানাবে, তারা সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেনে।